বিশেষ প্রতিনিধি
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। কাল বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাজেটে স্বভাবতই আমার প্রত্যাশা সীমিত। কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের একটা সীমাবদ্ধতা আছে, সময়ের ব্যাপার আছে। এছাড়া একটি নির্বাচিত সরকারের বাজেটের প্রতি অ্যাপ্রোচ—যে দীর্ঘ সময় তার থাকার মেয়াদ, এই ব্যবধানগুলো তো আমাদেরকে বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, যখন রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে, তখন পুরো উন্নয়ন বাজেটটা কিন্তু দেশের ভেতর থেকে কিংবা বাইরে থেকে ধার করে চালাতে হবে। ফলে যে সমস্যাটা হয়—সরকার যখন দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ঋণ নেয়, সেই ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে এবং দেশের মানুষকে সেটা দিতে হয় বছরের পর বছর। এছাড়া, ঋণের ওপর সুদের কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়। আবার দেশের ভেতর থেকে ঋণ নিলেও যে সুদ পরিশোধ করতে হয়, সেটা দেশের সামগ্রিক বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ ঋণ নিলে ব্যাংকের সুদ হার বেড়ে যায় এবং সরকার ব্যাংকের থেকে যখন বেশি ঋণ নিয়ে নেয়, তখন কিন্তু ব্যক্তি খাতে ঋণের পরিমাণ কমে যায়। এতে বিনিয়োগ হয় না, ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। মানুষের আয়ও বৃদ্ধি পায় না। বেসরকারি খাত ঋণ না পেলে দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগ বাড়ে না। সুতরাং আমি মনে করি, এই বাজেটে আমাদের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল, আমি মনে করি সেটা হয়নি।
বিএনপির নীতি-নির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য আরও বলেন, রাজস্ব পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ঋণ নিতে গেলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগে যেভাবে বাজেট চলে আসছে, মূলত সংখ্যার ছোটখাটো তারতম্য হয়েছে, কিন্তু বাজেটের যে প্রিন্সিপাল, ওই জায়গাটায় কিন্তু আমরা আগের মতো রয়ে গেছি। গতানুগতিক শব্দটা আমি বলতে চাই না, অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে পারেনি।
বাজেটের আকার আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এই বাজেট রাজস্ব আয়কে ভিত্তি করে করা উচিত ছিল। তাহলে বেসরকারি খাতে মানি ফ্লো থাকলো, তার বিনিয়োগও থাকলো এবং ইন্টারেস্ট রেটটা কমে আসতো। সুতরাং আমি মনে করি, এই মৌলিক জায়গায় গলদটা রয়ে গেছে। তিনি আরও মনে করেন, এই বাজেট বাস্তবায়ন আগামী দিনের সরকারের জন্য খুব একটা সহজ হবে না।